রবিবার, ১৮ মার্চ, ২০১৮

আশা নামের আলোটি কে কখনোই নিভতে দেওয়া উচিৎ নয়



একটি রুমের ভেতরে চারটি মোমবাতি জ্বলছিলো। মোমবাতি গুলো একে অপরের সাথে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলা শুরু করলো। প্রথম মোমবাতি টি বললো, ‘আমি শান্তি। কেউ আমাকে জ্বালিয়ে রাখতে পারবেনা। আমি এখন নিভে যাবো।’ তারপর সেটি নিভে গেলো।


. দ্বিতীয় মোমবাতি টি বললো, ‘আমি বিশ্বাস। শান্তি যেহেতু নেই, তাই আমার আর জ্বলতে থাকার কোনো প্রয়োজন দেখছিনা। আমি এখন এখন নিভে যাবো’। কথা শেষ করার পর দ্বিতীয় মোমবাতি টি নিভে গেলো। .

তৃতীয় মোমবাতি এবার মুখ খুললো, আমি ভালবাসা। শান্তি এবং বিশ্বাস কেউ নেই, তাই আমারো বেশিক্ষণ জ্বলার মত শক্তি নেই। মানুষেরা আমাকে গুরুত্ব না দিয়ে একপাশে সরিয়ে রাখে। শুধু তাই না, ওরা প্রিয় মানুষ গুলোকে পর্যন্ত ভুলে যায়।" কথা শেষ করে তৃতীয় মোমবাতি টিও নিভে গেলো।

. কিছুক্ষণ পর রুমের মধ্যে একটি বাচ্চা প্রবেশ করলো, তিনটা নিভে যাওয়া মোমবাতির পাশে টিমটিমে জ্বলতে থাকা চতুর্থ মোমবাতি দেখে বাচ্চা টি প্রশ্ন ছুড়ে দিলো, তোমরা জ্বলছো না কেন? .

তোমাদের পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত জ্বলা উচিৎ ছিলো। তারপর

বাচ্চা টি কাঁদতে শুরু করলো। এবার চার নম্বর মোমবাতি টি মুখ খোলে। ‘ভয় পেয়ো না। আমি যতক্ষণ জ্বলছি, তুমি চাইলেই আমাকে দিয়ে আবারো বাকি মোমবাতি গুলোকে জ্বালাতে পারো। আমার নাম আশা। "বাচ্চা টি আশা নামের মোমবাতি টি দিয়ে একে একে বাকি মোমবাতি গুলোকে আবারো জ্বালালো। সমস্ত রুমটা আবারো উজ্জ্বল আলোতে আলোকিত হয়ে উঠলো।

গল্পটি রূপক কিন্তু হাজারো হতাশা, দুঃখ আর সমস্যার অন্ধকারে ডুবে গিয়ে আশা নামের আলোটি কে কখনোই নিভতে দেওয়া উচিৎ নয়। কারন আশা না থাকলে আমাদের জীবন থেকে শান্তি, বিশ্বাস এবং ভালবাসাও অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।

নিজেকে পেয়ালার মত সংকীর্ণ না করে, নদির মত প্রশস্ত করুন।



একদিন এক যুবক খুব মন খারাপ করে উপসনালয়ে বসে ছিল। তার এই কষ্টক্লিষ্ট চেহারা দেখে এক বয়স্ক জ্ঞানী বৃদ্ধ তার পাশে এসে বসে বলল আমি কি তোমার সাথে একটু সময় কাটাতে পারি। যুবকটি রাজি হল। তখন লোকটি বলল, আসো আমরা একটি কাজ করি বলে তিনি একটি গ্লাস পানি ও এক প্যাকেট লবন দিলেন যুবকের হাতে। তাকে বললেন, এক মুঠ লবন নিয়ে গ্লাসে ঢাল ও গুলায়ে ফেল। যুবকটি তা করলে তিনি তাকে বললেন, এবার ওখান থেকে পানি খাও। যুবকটি পানি পান করল। তিনি তাকে জিজ্জেস করলেন, স্বাদ কেমন। সে বলল, অত্যধিক নোনতা, খেতে খুব কস্ট।


এবার তিনি যুবককে বাইরে একটি নদির পাড়ে নিয়্র গেলেন। বললেন, আবার এক মুঠ লবন নাও এবং তা নদির পানিতে মেশাও। যুবকটি তা করলে তিনি তাকে নদি থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে খেতে বললেন। যুবকটি নদি থেকে পানি নিয়ে পান করার পর বৃদ্ধ লোকটি জিজ্ঞেস করলেন, খেতে কেমন। সে বলল, আগের মত মোটেও নোনতা নয়, ভালই খেতে।

তখন লোকটি বলল, জীবনের পাওয়া সব দুঃখ কস্টগুলো ওই লবনের মতই। কস্টের পরিমানও সবসময় একই রকম থাকে। কিন্তু কস্টের অনুভূতিটা বা স্থায়িত্ব নির্ভর করে কতটুকু পরিসরে আমরা তাকে গ্রহন করছি।

নিজেকে পেয়ালার মত সংকীর্ণ না করে, নদির মত প্রশস্ত করুন। 
কস্টের পরিমানটাও অনেক কমে যাবে, বন্ধু।

সোমবার, ৫ মার্চ, ২০১৮

একটি অতশীপর বৃদ্ধা ও গাবতলী কাহিনী

 
অসুস্থ বাবা-মাকে ঢাকায় চিকিৎসা করানোর জন্য আনবো বলে অফিস শেষ করে গাবতলী টার্মিনালে আসা দেশের বাড়িতে যাবার জন্য। কিন্তু বিধিবাম। গাড়ি মিস। বসে বসে পরবর্তী বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। ইতিমধ্যে এই অতশীপর  বৃদ্ধার আগমন। পাশে বসলেন। আছেন কেমন জিজ্ঞেস  করতেই ফোকলা দাতের ভূবন মোহিনী হাসি দিয়ে শুরু করলেন তার শত বছরের জীবনের গল্প। ফরিদপুরে জন্ম। উনি এখন নাতি-পুতিনের বিয়ে দিয়ে এখন ঢাকার গাবতলি টার্মিনালে সেটেল হয়েছেন। সারাদিন ঘোরেন-ফিরেন টার্মিনাল জুড়ে। রাতে ফুটপাতেই ঘুমান। টার্মিনালের সবাই উনার নাতি হন। কোন পিছু টান নাই। খুব একটা দুখবোধও নাই। চোখে দেখেন না বললেই চলে। দাত বলে কিছু নাই। সারা মুখে বয়সের বলিরেখা।
 
প্রায় মিনিট ৩০ গল্প হল। আমার মনটা অসম্ভ রকম খারাপ ছিল। মনটা বেশ হাল্কা হল উনার সাথে গল্প করাতে। এই শতবর্ষী  বৃদ্ধার সাথে গল্প করতে করতে রাতের গাড়ি চলে এল। উঠার সময় উনার সাথে ছবি তোলার কথা বলতেই উনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, "তোরা বাপু কেমন পোলা, লজ্জা শরম নাই, ছবি তোলার কথা বলিস। আর দেখিস না আমি চোখে দেখিনা।" বৃদ্ধা দাদীর ধমক খেয়ে মনটা স্নেহে ভরে গেল। পরে দাদীকে কোন রকমে রাজী করিয়ে এই ছবি তোলা।
 
এই বয়সেও কারও প্রতি কোন অভিযোগ নাই তার। আর আমরা শুধুই অভিযোগ এর ডালি নিয়ে বসে থাকি সবসময়। নিজেকে খুব অশিক্ষিত মনে হল এই শতবর্ষী বৃদ্ধার কাছে। কথার মাঝেই হঠাৎ করে কিছু না বলেই উঠে চলে গেলেন আপন মনে। এইভাবে ঠুস  করে কিছু না বলে চলে যাওয়াতে আমার একটু মন খারাপ হল। পরক্ষনেই মনে হল উনি তো আমার সাথে আপন নাতির মতই কথা বলেছেন, আপন মানুষের সাথে তো এত ফর্মালিটি দেখানোর কিছু নাই।
 
আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের আপন মানুষগুলোর সাথে ফর্মালিটিস দেখাতে যেয়ে আপনত্বকেও কৃত্রিম করে ফেলছি। জমিয়ে ফেলছি অনেক অনেক অভিযোগ। বাড়ছে কষ্টবোধ। জীবন হচ্ছে জটিল।
 
দাদী, আপনি ভাল থাকুন। দোয়া করবেন যেন অভিযোগ নয়, ভালবাসতে শিখি অকৃত্রিমভাবে।।

একজন সেবক ও যুবকের কাহিনী

শীতের পড়ন্ত এক দুপুরে বসে ছিলাম আমার এক পরিচিত একজনের ওষুধের দোকানে (ভিতরে বসা) কিছুটা অলস সময় তার সাথে গল্প করে পার করার উদ্দ্যেশে। কিন্তু সাক্ষি হলাম এক মহৎ মানব সেবার। দোকানের মালিক বয়সে যুবক। দেখতে সুদর্শন ও স্বাস্থ্যবান। ডাকনাম খোকন। অত্যন্ত হাসিখুশি একটা মানুষ। চুয়াডাঙ্গা শহরের কেন্দ্রস্থলে ব্যাস্ততম ওষুধের দোকান তার। 
আমি দেশের বাড়ি গেলে সময় পেলে প্রায়ই বসি তার দোকানে। ছিলাম তার দোকানে প্রায় ৩ ঘন্টা। এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন বয়সের একাধিক নারী-পুরুষ তার দোকানে আসলো ওষুধ কেনার জন্য। লক্ষ্য করলাম বেশিরভাগ লোকই তার দোকানে এসে নিজেদের সমস্যার কথা বলে জিজ্ঞাস করে কি ওসুধ খেতে হবে? কেউ আসে ওষুধ নেবার জন্য, কেউ আসে ইঞ্জেকশন দেবার জন্য, কেউ আসে প্রেশার মাপানোর জন্য, কেউ আসে এক্সিডেন্ট করে ড্রেসিং করার জন্য, কেউ বা আসে তার ঠিকমত টাকা নাই তাই কম টাকা দিয়ে ওষুধ নেবার জন্য, কেউ বা আসে শুধুই গল্প করার জন্য। সে হাসিমুখে সবার কথা শুনে। একইসাথে নিজেই নার্স, কম্পাউন্ডার, ডাক্তার, ফার্ষ্টএইডার, সেলসম্যান, মালিক, গল্পকারির, কর্মচারির, আবার দোকানের ঝাড়ুদারের ভূমিকা পালন করে। সাজেশন দেয় রুগির সাধ্যের ভিতর সব থেকে ভাল ও খরচ কম হবে এমন ওষুধের। সেবার জন্য সে কোন পয়সা নেয়না।
এইভাবেই সেবা করে যাচ্ছে ২০০৭ সাল থেকে। বাবা ছিলেন এলাকার নামকরা প্যারামেডিক ডাক্তার। বাবার কাছ থেকেই দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাসেবা শেখা। বেশ কয়েক বছর ইতালিতে কাটিয়ে ২০০৭ সালে দেশে ফিরে বাবার এই ওষুধবিক্রি ব্যাবসায় নাম লেখানো। সাথে করে যাচ্ছে বিনাপয়সায় মানবসেবা। সারাটাসময় মুখের হাসিটা একটুও মলিন হয়না তার। খুবই বন্ধুবাৎসল। বন্ধু বা পরিচিত কেউ দোকানে আসলে শত ব্যাস্ততার মধ্যেও আপ্যায়ন করতে ভুল হয়না। শত ব্যাস্ততার মাঝেও পরিবার ও বন্ধুদের সময় দিতে ভুল হয়না। ভাবখানা এমন যেন সবাই তার আত্বীয়, তার বাসায় বেড়াতে এসেছে। কোন গরিব মানুষ দোকানে ওষুধ কিনতে আসলে যদি টাকায় কম পড়ে সে হাসি মুখে তা নিয়ে নেয়।
ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্যই বিনাপয়সায় ছোটখাট ওসুখের জন্য চিকিৎসাসেবা দেয়। আবার গরিব মানুষ সাহায্যের জন্য আসলে যতটুকু পারে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে দোকান খুলেই শুরু হয় তার ওষুধ বিক্রি ও সাথে এই বিনা পয়সার মানবসেবা, চলে মাঝরাত পর্যন্ত। এমনকি পরিচিত মানুষ অথবা বন্ধুবান্ধব এর কোন আত্বীয়স্বজন রাতবিরাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জানালে বাসায় যেয়ে সেবা দিয়ে আসে। সৌভাগ্যক্রমে তার বন্ধুত্ব আমি পেয়েছি। নিরবে নির্ভিতে অসংখ্য মানুষকে এইভাবেই সেবা দিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর। কেউ হয়তো খেয়ালও করেনা তার এই মানবসেবা। সেও প্রতিদানের আশা করেনা কখনও।
এইভাবে হয়তো দেশের আনাচে কানাচে কতশত খোকন মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে কোনকিছুর প্রত্যাশা না করেই। এদের জন্যই হয়তো আজও আমরা শত অভাব আর অন্যায়ের মাঝেও সুন্দর সমাজের স্বপ্ন দেখি, মানবতার মানে খুজি।
আসুন আমরা সবাই মিলে মানবতাকে আকড়ে ধরি, যার যার অবস্থান থেকে সাধ্যমত অন্যের জন্য করার চেষ্টা করি। সিনেমার সেলুলয়েডের রঙিন ফিতায় হিরো না খুঁজে নিজেরাই মানবতার সেবা করে বাস্তবের হিরো হই। তাতে মানুষ হিসাবে আমরাই মূল্যবান হব, হব সৃষ্টির সেরা জীব। সমাজ হবে সুন্দর, দূর হবে অন্ধকার।

রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১৮

নিজের শিকড়কে অবজ্ঞা করবেন না, বন্ধু।

নিজের শিকড়কে অবজ্ঞা করবেন না, বন্ধু।  

   এক গ্রামে একটি বড় আম গাছ ছিল। সেই গাছের তলায় প্রতিদিন একটি বালক খেলা করত, গাছের ডালে চড়তো, আম পেড়ে খেত ও প্রায়ই গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ত। সে গাছের সাথে খেলতে খুব পছন্দ করত, আর গাছটিও তাকে খুব ভালবাসত। বেশ কয়েক বছর গড়িয়ে গেল এইভাবে। এক সময় সে আর গাছ তলায় খেলতে আসা বন্ধ করে দিল। 
কয়েক বছর পর একদিন বালকটি গাছের কাছে ফিরে আসল বিষন্ন মুখে। গাছটি তার দিকে তাকিয়ে বলল, আসো আমার সাথে খেলা কর। সে তখন বলল, আমি আর এখন বালক নেই, আমি বড় হয়ে গেছি। আমার এখন খেলনা চাই, সেগুলো কেনার জন্য টাকা দরকার। গাছটি বলল, বাবু আমার কাছে তো কোন টাকা নাই, তবে তুমি আমার আমগুলো পেড়ে নিয়ে যাও এবং তা বিক্রি করে তোমার খেলনা কেনো। বালক অতি আনন্দের সহিত গাছের সবগুলো আম পেড়ে নিয়ে চলে গেল, কিন্তু আর ফিরে এলনা। গাছটি অপেক্ষায় ছিল সে হয়তো ফিরে আসবে, কিন্তু আসল না। তার ফিরে না আসাতে গাছটি খুব দুঃখ পেল।

বহুদিন পর বালকটি যখন আবার আম গাছের কাছে ফিরে আসলো তখন সে যুবক। গাছটি অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে বলল, আসো আমার সাথে খেলা কর। সে তখন বলল, আমার এখন সময় নাই, আমার পরিবারের জন্য বাড়ি তৈরি করা লাগবে। তুমি কি আমাকে সাহায্য করতে পার? গাছটি বলল, আমার তো বাড়ি নাই, কিন্তু তুমি আমার ডালপালা গুলো কেটে বাড়ি বানাতে পার। সে তখন গাছের সব ডালপালা কেটে নিয়ে খুশিতে নাচতে নাচতে চলে গেল। গাছটি বালকটির আনন্দ দেখে খুশি হল, কিন্তু তারপর সে আর ফিরে এলনা। গাছটি আবার একা হয়ে গেল ও খুব দুঃখ পেল।

 বহু বছর পর এক গ্রীষ্মদিনে লোকটি আবার গাছের কাছে ফিরে আসলো। গাছটি তাকে দেখার সাথে সাথেই খুশি হয়ে গেল ও বলল, আসো আমার সাথে খেলা কর। লোকটি বলল, আমি এখন বয়স্ক হয়ে গেছি। আমার এখন একটা নোকার দরকার অবসর সময়ে মাছ ধরে আনন্দমুখর সময় কাটানোর জন্য। তুমি কি আমাকে সাহায্য করতে পার। গাছটি বলল, আমার তো কোন নোকা নাই, তবে তুমি আমার গুড়িটি কেটে তা দিয়ে নোকা বানাতে পার। লোকটি গাছের গুড়িটি কেটে নিয়ে নোকা বানিয়ে মনের আনন্দে নোকা বাইতে চলে গেল, আর ফিরে এলনা বহুদিন। 

একদিন আবার লোকটি গাছের গোড়ায় ফিরে আসল, তখন সে থুরথুরে বৃদ্ধ। গাছটি তাকে দেখে বলল, বাবা এখন তো আমার তোমাকে দেবার জন্য আম নাই। লোকটি বলল, আমার এখন আম খাবার মত দাতও অবশিষ্ট নাই। গাছটি বলল, আমার তো কোন গুড়িও নাই যাতে তুমি চড়তে পার। লোকটি বলল, আমারও আর চড়ার শক্তি নাই। গাছটি বলল, আমার কাছে শুধু আমার শিকড় ছাড়া তোমাকে দেবার আর কিছুই নাই। ওগুলোই নিয়ে যাও। বৃদ্ধ লোকটি বলল, না, আমার আর ওসবেরও কোন দরকার নাই। আমি এখন আর আর নড়াচড়া করতে পারিনা ঠিকমত। আমি তোমার শিকড়ের উপরই বিশ্রাম নিতে চাই শেষ বয়সে। গাছটি বলল, আসো আমার উপর বস ও বিশ্রাম নাও। বৃদ্ধটি গাছের শিকড়ের উপর বসল এবং গাছটি অনেক খুশি হল ও হাসল। 

গাছটি আসলে আমাদের বাবা-মায়ের প্রতিক। আমরা যখন ছোট থাকি তাদের সাথে খেলতে ভালবাসি, বড় হলেই তাদেরকে একা করে চলে যায় নিজের প্রয়োজনে, যখন কিছুর দরকার পড়ে আমরা আবার ফিরে আসি তাদের কাছে। আমাদের সব আবদার তারা হাসিমুখে পূরন করে। কিন্তু আমরা ফিরেও চাইনা তাদের দিকে। ভুলে যায় তাদের অবদানের কথা। নিজেদের নিয়েই মত্ত থাকি। বাবা-মা তাদের সবকিছুই উৎসর্গ করেন সন্তানের জন্য, বিনিময়ে হয়ত একটু সঙ্গ চান। তারা চান আমরা যেন একটু হাসিমুখে কথা বলি, তাদের পাশে থাকি। যেন অবজ্ঞা না করি। 
 
আসুন না, খুব বেশি দেরি হবার আগেই বাবা-মাকে অন্তত এতটুকু সময় দেয়, সন্মান করি, ভালবাসি। না হলে যেদিন এই গাছরুপি বাবা-মা হারিয়ে যাবে সেদিন কেঁদেও কোন লাভ হবেনা। আর আপনিও একদিন বাবা অথবা মা হবেন, তাইনা? 

রুঢ় বাস্তবতা বা অলিক অসত্য



নূপুরের দাম হাজার টাকা হলেও তার স্থান পায়ে, অথচ টিপের দাম একটাকা হলেও তার স্থান কপালে। ইতিহাস স্বাক্ষী আজ পর্যন্ত কোনো দিন লবনে পোকা ধরেনি, কিন্তু মিষ্টিতে প্রতিদিনই ধরে আবার পিপড়া ও ছাড়ে না। মোমবাতি জ্বালিয়ে মৃতব্যক্তিকে স্মরণ করা হয়, আবার মোমবাতি নিভিয়ে জন্মদিন পালন করা হয়। মানুষ সোজা পথে চলতে চায় না, বাকা পথে সবারই আগ্রহ বেশি। তাই তো মদ বিক্রেতাকে কোথাও যেতে হয় না, আর দুধ বিক্রেতাকে বাজারের ধারে ধারে ঘুরতে হয়। আমরা দুধ বিক্রেতাকে সর্বদা বলে থাকি দুধে পানি মিশান নি তো? অথচ মানুষেরা মদে পানি মিশিয়ে খায়। মানুষকে জানোয়ার বললে খেপে যায়, আর বাঘের বাচ্চা বললে খুশি হয়।। অথচ দুটোই পশুর বাচ্চা। আমরা মানুষ বড়ই আজব।। ভাল মন্দের পার্থক্য কবে বুঝবো?? (উৎসকৃত)

ভাবতেছি জবটা চেঞ্জ করব। কিন্তু ভয় পাচ্ছি!

ভাবতেছি জবটা চেঞ্জ করব। কিন্তু ভয় পাচ্ছি! যারা এমন চিন্তায় আছেন তারা ঠিক লাইনেই আছেন। কারন আপনি কেন জব চেঞ্জ করতে চান তা আপনার থেকে ভাল কে...