বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২

ভাবতেছি জবটা চেঞ্জ করব। কিন্তু ভয় পাচ্ছি!

ভাবতেছি জবটা চেঞ্জ করব।
কিন্তু ভয় পাচ্ছি!

যারা এমন চিন্তায় আছেন তারা ঠিক লাইনেই আছেন। কারন আপনি কেন জব চেঞ্জ করতে চান তা আপনার থেকে ভাল কেউ বুঝবে না। আবার আপনি যে ভয় পাচ্ছেন সেটাও ঠিক আছে, কারন বিশ্ববাজার ইদানিং অতিরিক্ত অস্থির।

তবে, জব চেঞ্জ করেন আর নাই করেন, ইন্টার্ভিউ এর কল পেলে এটেন্ড করতে পারেন। এতে মার্কেটে আপনার চাহিদা, যোগ্যতা ও দুর্বলতার একটা পরিক্ষা হয়ে যাবে। অর্থাৎ আপনি এখনও দারুনভাবে মার্কেটেবল আছেন কিনা।

তবে জব চেঞ্জ করার ব্যাপারে যেন শুধুই পদবি, অর্থলোভ বা অর্থলাভ চিন্তা করবেন না। যেখানে আপনার মতামত, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও যোগ্যতাকে সম্মান করা হবে এবং আপনাকে কাজের প্রয়োজনে যেটুকু অথোরিটি দরকার সেটা দেওয়া হবে সেখানেই যাবেন। আর যতদিন পর্যন্ত নতুন কোন জবে না ঢুকছেন, তার আগের দিন পর্যন্ত যে প্রতিষ্ঠানে যে দায়িত্বে আছেন তার সবটুকু নিজের প্রতিষ্ঠান মনে করে ভালবেসে কাজ করে যাবেন।

তবে জব ফাইনালি চেঞ্জ করার পূর্বে যে কোম্পানি থেকে অফার এসেছে তার সম্পর্কে আপনার সাধ্যমত খোজ বা পরামর্শ নিবেন এক বা একাধিক উৎস থেকে, কিন্তু সিধান্ত নিবেন নিজের মন থেকে।

উপরোক্ত অভিমত আমার একান্ত ব্যাক্তিগত, কারও অমত থাকতেও পারে।

"সাবধান! এই লেখাটা পুরো পড়লে আপনি এভাটার থেকে মানুষ হয়ে যেতে পারেন"

 "সাবধান! এই লেখাটা পুরো পড়লে আপনি এভাটার থেকে মানুষ হয়ে যেতে পারেন"


আমরা মেটাভার্সের (ফেসবুক) অবাস্তব এক রঙচঙে দুনিয়ার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। যেখানে বাস্তবতা আড়াল করে সবাই নিজের এবং অন্যের সুখি, সমৃদ্ধ ও চকচকে সুন্দর এভাটার দেখাতে ও দেখতেই ব্যাস্ত! 💪

এখানে সবাই নিজেকে হয় শক্তিশালী ও প্রভাবশালী প্রমান করতে ব্যাস্ত, নাহয় শক্তিশালি ও প্রভাবশালি লোকদের তোষামোদে ব্যাস্ত। খোজ রাখি না দূর্বল, পিছিয়ে পড়া বা কমজোর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন, খুব কাছের পরিচিত মানুষদের যারা ছোট কাল থেকে আজ পর্যন্ত জীবন চলার পথে আমাদের সঙ্গ দিয়েছে। অত সময় কোথায় আমাদের! 👉

এই মেটাভার্সের রঙিন জগতে বাস্তবে কে কেমন আছে বোঝার চেস্টাও করিনা, বোঝার উপায়ও নাই। শুধুই ভাল থাকা ও ভাল রাখার অভিনয় করে চলা এক একজন ভার্চুয়াল দুনিয়ার এভাটার আমরা! 🤴

কতই না ভাল ভাল! হত যদি আমরা আবার মেটাভার্সের ভার্চুয়াল এভাটার থেকে পুরোপুরি ইউনিভার্সের মানুষ হতে পারতাম!! 🫂

মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২

একটি চাকুরীর অবাক ও বাস্তব ইন্টার্ভিউঃ

আমার নেওয়া গতকালের একটি ইন্টার্ভিউ এর ঘটনা শেয়ার করব আজ। আমি গতকাল টেরেটরি সেলস এক্সিকিউটিভ পজিশনের জন্য ইন্টার্ভিউ নিচ্ছিলাম। ক্যান্ডিডেট নামকরা একটি পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং এ অনার্স ও মাস্টার্স করেছে। সে খুব স্মার্টলি ইন্টার্ভিউ রুমে প্রবেশ করল। সেই ক্যান্ডিডেট সাথে কথপকথন এর কিছু অংশ তুলে ধরছিঃ

আমিঃ নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন?

ক্যান্ডিঃ শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে গ্রাজুয়েশন করা আর তার বাড়ি কোথায় এটা বলে চুপ হয়ে গেল।

আমিঃ আর কিছু বলতে চান?

ক্যান্ডিঃ না, স্যার।

আমিঃ আপনার কোন এক্সট্রা ক্যারিকুলারের গল্প নাই?

ক্যান্ডিঃ না স্যার, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটু আধটু পলিটিক্স করতাম, তাই আর অন্য কিছু করিনি।

আমিঃ তাহলে আপনার পলিটিক্সের গল্পই বলেন।

ক্যান্ডিঃ স্যার, আসলে ওখানে তেমন কোন কিছু ছিলাম না। ঘুরে বেড়িয়েছি আর আড্ডা দিয়েছি।

আমিঃ আচ্ছা তাহলে আপনি কোথায় কোথায় ঘুরেছেন সেটা বলেন।

ক্যান্ডিঃ স্যার, ঢাকার আর নিজের এলাকার বাইরে তেমন কোথাও ঘুরিনি।

আমিঃ আপনি তো ৩ বছর হল গ্রাজুয়েশন করেছেন। এই ৩ বছর কি করেছেন?

ক্যান্ডিঃ স্যার, টিউশনি করাই।

আমিঃ সরকারি চাকুরীর জন্য চেষ্টা করছেন না বা বেসরকারি চাকুরীর ইন্টার্ভিউ দিচ্ছেন না?

ক্যান্ডিঃ আমার অত পড়তে ভাল লাগে না তাই সরকারি চাকুরীর চেষ্টা করিনা।

আমিঃ তাহলে বেসরকারি চাকুরী কেন শুরু করলেন না?

ক্যান্ডিঃ স্যার, একটা কোম্পানিতে সেলসে এমটিও পদে চাকুরী শুরু করেছিলাম। ৫ মাস চাকুরী করেছি (কোম্পানিটি কিন্তু অনেক বড় এবং চাকুরী সহজে যায়না)। কিন্তু কাজের অনেক চাপ তাই চাকুরি ছেড়ে দিয়েছি। বেতন ছিল ৪০ হাজার টাকা।

 

(এরপর চাকুরী ছেড়ে দিয়ে আজ ২ বছরের বেশি বেকার হয়ে টিউশনি করে মাসে ১২ হাজার টাকা আয় করে।)

আমিঃ আপনাকে ফ্রেশ গ্রাজুয়েট হিসাবে ৪০০০০ টাকা দিবে আপনাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেবে না, সেটা কেন ভাবলেন?

ক্যান্ডিঃ স্যার, আসলে চাকুরিটা সহজে পেয়ে গিয়েছিলাম তাই গুরুত্ব দেয়নি, মনে করেছি আবার সাথে সাথেই চাকুরী পেয়ে যাব।

আমিঃ আপনি ৫ মাস কাজ করেই কেমন করে বুঝেছিলেন যে ক্যারিয়ার নাই ওখানে?

স্যারঃ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইয়েরা বলেছিল।

আমিঃ আপনি যে বললেন আপনার বড় ভাই বিসিএস এর জন্য ট্রাই করছে ৫ বছর ধরে। এখনও হয়নি। আপনি সেটা থেকেও শিক্ষা নিয়ে কেন সিরিয়াস হলেন না?

ক্যান্ডিঃ চুপ করে রয়েছে।

অথচ তার বাবা কৃষিকাজ করে। তার ভিতর তেমন কোন আক্ষেপও নাই এ নিয়ে। আমি তার আগের কোম্পানির কাজের যে এক্সপেরিয়েন্স তা থেকে ২-৩ টা খুব সহজ প্রশ্ন করলাম। সে কোন উত্তর দিতে পারল না।

আমিঃ আপনি তো আগের কাজের অভিজ্ঞতাও বলতে পারছেন না, তাহলে আপনাকে কি নিয়ে জিজ্ঞেস করব? (আসলে আমি চাচ্ছিলাম কোনভাবে তার ভিতর থেকে পটেনশিয়ালিটি বের করে নিয়ে আসতে যেন তাকে নিতে পারি)

ক্যান্ডিঃ স্যার, আমার তো বেশি কাজের এক্সপেরিয়েন্স নাই, তাই উত্তর দিতে পারছি না। আপনি একাডেমিক প্রশ্ন করলে আমি পারব।

আমিঃ আচ্ছা, আপনার অনার্সএ কয়টা মেজর কোর্স ছিল?

ক্যান্ডিঃ স্যার, মনে হয় ৪টা।

আমিঃ মনে হয় কেন? আমি তো জানি ৮টা ছিল।

ক্যান্ডিঃ জ্বি স্যার, ৮টা ছিল।

আমিঃ কোর্সগুলার নাম বলতে পারবেন?

ক্যান্ডিঃ ২টা কোর্স এর নাম বলতে পারল খুব কষ্টে।

আমিঃ আপনি তো আপনার একাডেমিক কোর্সে এর নামও তো জানেন না?

ক্যান্ডিঃ স্যার, অনেকদিন (২ বছর) হয়েছে তো, তাই ভুলে গেছি (হাসতে হাসতে বলল)।

আমিঃ আচ্ছা, আপনি আজ ইন্টার্ভিউ দেবার জন্য কি কি প্রিপারেশন নিয়েছেন?

ক্যান্ডিঃ স্যার, সময় পায়নি তেমন। শুধু একটু ইন্টারনেটে আপনাদের কোম্পানি সম্পর্কে কিছি তথ্য দেখে এসেছি।

আমিঃ আচ্ছা, আপনি যে এখানে ইন্টার্ভিউ দিতে এসেছেন, আমাদের কোম্পানি সম্পর্কে কি জানেন?

ক্যান্ডিঃ স্যার, আপনাদের কোম্পানি জার্মান (!)। (অথচ কোম্পানির নাম ডেনমার্কের নামের সাথে মিল করে রাখা)।

আমিঃ আমাদের পণ্য কি বলেন তো?

ক্যান্ডিঃ আপনারা কেক বিক্রি করেন।

আমিঃ আমাদের পণ্যের কয়েকটা ব্র্যান্ডে এর নাম বলেন তো?

ক্যান্ডিঃ স্যার, অনেক আগে খেয়েছি তো তাই মনে আসছে না।

আমিঃ তাহলে আপনি কি জন্য এখানে এসেছেন?

ক্যান্ডিঃ স্যার, আমি মনে করেছিলাম যে আমার ইন্টার্ভিউ ভালই হবে।

আমিঃ তো, এখন কি মনে হচ্ছে যে আপনার ইন্টার্ভিউ কেমন হয়েছে?

ক্যান্ডিঃ চুপ করে রইল।

আমিঃ আপনি যে ২ বছর ধরে বেকার এত ভাল একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা বিষয় থেকে পাশ করেও, তারপরও আপনি ইন্টার্ভিউ এর জন্য সিরিয়াস না কেন?

ক্যান্ডিঃ স্যার, এরপর থেকে সিরিয়াস হব। আমাকে চাকুরিটা দেন।

আমিঃ আচ্ছা, ঠিক আছে, আপনাকে না হয় সু্যোগ দিব। স্যাল্যারি নিয়ে কোন এক্সপেক্টেশন আছে কিনা।

ক্যান্ডিঃ স্যার আমাকে ৪০০০০ হাজার টাকা দিলেই হবে শুরুতে। স্যার, আপনাদের টি/ডিএ কত?

আমিঃ কেন ৪০০০০ টাকা, এর থেকে বেশি বা কম না কেন?

ক্যান্ডিঃ স্যার, আগের কোম্পানিতে এটা পেতাম।

আমি নির্বাক হয়ে বসে রইলাম সে যাওয়ার পর কিছুক্ষন।

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২০



#দশানূ_জীবন

জীবন যখন ল্যাংচাই,
ভালবাসা ও ভালথাকা
দুটোই তখন মুখ ভ্যাংচাই।
বলতে বারন অনেক কথা,
কিন্তু শুনতে তোমায় হবেই
হোক না যতই কান ব্যাথা।
তোমার মত করে তুমি
অন্যের জন্য করে যাও,
কি পাবে কি পাবে না
তার হিসাব ভূলে যাও।
জীবন খাতায় যতই তুমি
লেনাদেনার হিসাব কসো,
ব্যালেন্সশিট মিলবে না
এটা ভেবেই অংকে বসো।
তারপরও নুইয়ে মাথা
হয়তো বেচে থাকতে হবে,
পা দুটোকে আগলে রেখো
অনেক পথ হাটতে হবে।

পা ও পথ

শিবলী এইচ আহমদ


পা দুটোকে সাথেই রাখিস
অনেক পথ যেতে হবে,
টপকাতে হবে অনেক খাদ।
মাথা তো নুয়েছে অনেক আগেই
অন্তত পা দুটো বেচে থাক।
পা পা করে পায়ের চলা
অবিরত চলতেই থাক,
পাসনে ভয় ওরে মানব
একদিন ঠিকই কুর্নিশ পাবি
এই পায়েই ওরা রাখবে হাত।

শিবলীর অদম্য ইচ্ছাই বড় হওয়ার সাহস জুগিয়েছে


শিবলীর অদম্য ইচ্ছাই বড় হওয়ার সাহস জুগিয়েছে

জাগো নিউজ ডেস্ক
 জাগো নিউজ ডেস্ক
 প্রকাশিত: ০৬:১৭ পিএম, ০১ জানুয়ারি ২০২০
শিবলী এইচ আহমদ সহকারী মহাব্যবস্থাপক হিসেবে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) এফএমসিজি ডিভিশনের মানবসম্পদ বিভাগের (এইচআর) দায়িত্বে আছেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাকে। তিনি এমন এক এলাকা থেকে ঢাকায় এসেছেন; যেখানে কর্পোরেট মানুষ প্রায় নেই বললেই চলে। নিজের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যেও সাহায্য করার মত কেউ ছিল না। তাই রেফারেন্স পাওয়ার সুযোগও কম ছিল। তার অদম্য ইচ্ছাই তাকে বড় হওয়ার সাহস জুগিয়েছে। সম্প্রতি তার ক্যারিয়ার ও সফলতা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বেনজির আবরার—
আপনার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা সম্পর্কে জানতে চাই—
শিবলী এইচ আহমদ: যশোর বোর্ডের অধীনে প্রথম বিভাগে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে অনার্সে ভর্তি হই। এরপর প্রতিটি সার্টিফিকেট পরীক্ষাতেই প্রথম শ্রেণির ফলাফল নিয়ে একে একে ঢাবি থেকে আইআরে মাস্টার্স, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে পিজিডি ইন এইচআরএম, বিকেএমইএ থেকে পিজিডি ইন সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স, আইবিএ, ডিইউ থেকে এমডিপি প্রোগ্রামের কয়েকটি শর্টকোর্সসহ অসংখ্য ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে নিজের দক্ষতাকে প্রতিনিয়ত উন্নত করে চলেছি। যা নিজেকে কর্পোরেট জগতে টিকিয়ে রাখতে এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
Shibli-cover.jpg
ক্যারিয়ারের শুরুটা কেমন ছিল?
শিবলী এইচ আহমদ: ১৪ বছরের চাকরি জীবনের শুরু হেরিটেজ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন লিমিটেডে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে। এরপর একে একে কিউবি বাংলাদেশ, নাভানা গ্রুপ, প্যাসিফিক এ-১ গ্রুপে এইচআর ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। তারপর হেড অব এইচআর হিসেবে ডেকো ফুডস লিমিটেড ও গেটকো গ্রুপের দায়িত্বেও নিয়োজিত ছিলাম।
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছেন। এদেশে কী ধরনের প্র্যাক্টিস হচ্ছে?
শিবলী এইচ আহমদ: আমার নেশা-পেশা মানবসম্পদের উন্নয়নে কাজ করা। কিভাবে আমার সহকর্মীরা প্রতিষ্ঠানে ভালো থাকবে এবং তারা আরও দক্ষ হয়ে কোম্পানির বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জনে ও নিজের ক্যারিয়ার উন্নয়নে সহায়ক হবে। সেই লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছি, যখন যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। যারা আমাকে ভালোভাবে চেনেন, তারা জানেন যে আমি আমার কাজের প্রতি কী পরিমান একনিষ্ঠ।
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছি প্রায় এক যুগেরও বেশি। এ দীর্ঘ পথচলায় এটুকু বলতে পারি, আগামী দিনের এইচআর বিভাগ হবে বিজনেস ড্রাইভার ও সংখ্যা নির্ভর। দিনে দিনে এইচআর বিভাগের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে কোম্পানি ম্যানেজমেন্টের কাছে। দেশীয় কোম্পানিগুলো এখন ট্রাডিশনাল এইচআর থেকে ট্র্যানজিশনাল এইচআর প্র্যাক্টিসে আসছেন বিজনেসের স্বার্থে। তারা চাইছেন, তাদের এইচআর বিভাগ বিজনেসের সর্বত্র ভূমিকা রাখুক বিজনেসের উত্তরোত্তর উন্নতির জন্য। দিনে দিনে কোম্পানিগুলো কোয়ালিটি ম্যানপাওয়ার নিশ্চিতকরণের জন্য খুবই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তারা এখন কোয়ালিটি সার্ভিস, প্রোডাক্টের মেশিন বা ম্যাটেরিয়াল, এর পাশাপাশি কোয়ালিটি ম্যানপাওয়ারের দিকে ফোকাস হচ্ছেন। আর এ কোয়ালিটি ম্যানপাওয়ার নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব কিন্তু এইচআর বিভাগেরই। তাই বিজনেস অপারেশন না বুঝলে যেমন এইচআর প্রফেশনালরা কোম্পানির চাহিদা পূরন করতে পারবেন না, তেমনই নিজের চাকরিটাও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
এইচআর প্র্যাক্টিস দিনে দিনে আমাদের দেশে বেড়েই চলেছে। প্রতিটি দিনই নতুন নতুন এইচআর ম্যাট্রিক্স যোগ হচ্ছে কোম্পানির এইচআর বিজনেস পার্টনার হিসেবে এইচআর বিভাগকে দায়িত্ব পালনের জন্য। এইচআর আর এখন সাইড স্ট্রিমে নয়, মেইন স্ট্রিমে কাজ করছে। যেহেতু মানুষই কোম্পানির মূল চালিকাশক্তি ও সম্পদ। তাই কোম্পানিতে কর্মরত এ মানষগুলোর দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে কোম্পানির সম্পদে পরিণত করতে হবে। এতে প্রয়োজনীয় বেতন-ভাতাদিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘ মেয়াদে কোম্পানিতে কাজ করার অনুপ্রেরণা ধরে রেখে কিভাবে কোম্পানির সেলস রেভিনিউ, বিজনেস গ্রোথ এবং ব্রান্ড লয়ালিটি বাড়ানো যায় এবং কোম্পানির অপারেশনাল এক্সপেন্স কমিয়ে কোম্পানির প্রোফিটকে বৃদ্ধি করা যায়, সেটাই এইচআরের মূল কাজ।
Shibli-cover.jpg
এইচআর প্রফেশনাল হিসেবে উন্নতির জন্য কী জানা জরুরি?
শিবলী এইচ আহমদ: এইচআর অ্যানালিটিক্স নিয়ে এখন প্রচুর কাজ হচ্ছে আমাদের দেশে। বড় কোম্পানিগুলো কেপিআই নির্ভর পারফরমেন্স, টোটাল রিওয়ার্ড ম্যানেজমেন্ট, এমপ্লয়ি ভ্যালু প্রপোজিশন নিয়ে গভীরভাবে কাজ করছে। এইচআর প্রফেশনালকে কোম্পানির ব্যালেন্সশিট, মিশন, ভিশন ও ভ্যালুজ বুঝতে হবে। জানতে হবে কোম্পানির ভ্যালু চেইনের সাকসেস ফ্যাক্টরস, মিশন ক্রিটিক্যাল পজিশন্সগুলো-যা বিজনেসের প্রফিট মার্জিন তথা বটম লাইনে প্রভাব ফেলে। রেগুলার কম্পিটিশন অ্যানালিটিক্স, মার্কেট ডিনামিক্স জানা থাকতে হবে এইচআর প্রফেশনালকে। এসব জানা না থাকলে বিজনেসের চাহিদা অনুযায়ী এইচআর বিভাগ ইনপুট বা ডেলিভারি দিতে পারবে না। আগামী দিনগুলোতে প্রচুর এইচআর পেশাজীবীর চাহিদা হবে ইন্ডাস্ট্রিতে। যারা আক্ষরিক অর্থে বিজনেসের উন্নয়নে সহায়ক হবে। এইচআর প্রফেশনালকে সবসময় মনে রাখতে হবে, সঠিক মানুষ সঠিক জায়গায় সঠিক সময়ে সঠিকভাবে নিয়োগ দিয়ে সঠিকভাবে সঠিক বিষয়ে দক্ষ করে তুলে তার সঠিক যত্ন নিলে সে সঠিক ফলাফল বয়ে আনবে কোম্পানির জন্য। আর এজন্য কনটেম্পোরারি এইচআর এভিনিউগুলো এইচআর প্রফেশনালকে চিনতে হবে। বুঝতে হবে কোম্পানিতে কর্মরত প্রতিটি মানুষের জব নেচার ও জব কনটেক্স অনুযায়ী কেআরএ এবং কেপিআই কী হবে। তেমনি জানতে হবে টিএনএ ও স্টেকহোল্ডার ট্রেড রিলেশন। যারা প্রোডাকশন রিলেটেড কোম্পানির এইচআর বিভাগে কর্মরত আছেন, ম্যান-মেশিন অ্যানালাইসিস ও ইন্টারনাল কাস্টমার ডিমান্ড জানতে হবে।
তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে কী কী করছেন?
শিবলী এইচ আহমদ: তরুণদের সাথে বিগত কয়েক বছর ধরে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার, পারসোনাল ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, গ্রুপ কাউন্সেলিং, কোচিং, ট্রেনিং, সোশ্যাল মিডিয়ায় নলেজ শেয়ারিং ছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানিতে ইন্টারভিউ ফেস করার সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টে সহায়তা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। তরুণদের বিভিন্ন প্রফেশনাল নেটওয়ার্কের আওতায় এনে চাকরিপ্রাপ্তি ও ক্যারিয়ারে উন্নতি করার জন্য কখনো সরাসরি সহায়ক, কখনো পরামর্শকের ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছি। যেহেতু বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্টের (বিএসএইচআরএম) নির্বাচিত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলরের দায়িত্বে আছি। সেই প্রেক্ষাপট থেকেও আমাকে সবসময়ই তরুণদের ক্যারিয়ারের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হয়। এছাড়াও সেলস অ্যাম্বাসেডর বাংলাদেশ, সেলস লিডারস বাংলাদেশ, বিল্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অর্গানাইজেশন ফর লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বোল্ড), বাংলাদেশ সোসাইটি ফর এপারেল এইচআর প্রফেশনাল (বিশার্প), ইয়ুথ ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউটসহ বেশ কয়েকটি পিপলস ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাথে ওতপ্রোতভাবে অনেকদিন থেকেই কাজ করছি তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে। গ্লোবাল গুডউইল অ্যাম্বাসেডর (ইউএসএ) হিসেবেও আমার একটি নৈতিক দায়িত্ব আছে তরুণ সমাজের প্রতি। ২০২০ সালে ন্যাশনাল লেভেলে আরও বড় পরিসরে কাজ করার পরিকল্পনা আছে। ক্যারিয়ার থেকে লব্ধ আমার কোনো পরামর্শ বা অভিজ্ঞতা যদি কোনো মানুষের ক্যারিয়ার উন্নতির কাজে আসে বা জীবন চলার পথ সহজ করে তাহলে সেটাই আমার প্রাপ্তি। প্রতিটি তরুণের ভেতরেই অপরিসীম সম্ভাবনা আছে ভালো কিছু করে দেখানোর। শুধু দরকার একটু সঠিক দিক নির্দেশনা। যেটা আমি আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে পাইনি। ফলে অনেক কষ্ট হয়েছে ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে। তাই আমি চাই, আমার পরিচিত কোনো তরুণ-তরুণী যেন সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে ক্যারিয়ারের শুরুতেই ভুল পথে চলে না যায় বা সিদ্ধান্তহীনতায় না ভোগে।

চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আপনার পরামর্শ কী হতে পারে?
শিবলী এইচ আহমদ: চাকরিপ্রার্থীদের জন্য পরামর্শ হলো- প্রথমেই কী ধরনের চাকরি করতে ভালোবাসেন, নিজের মধ্যে কী গুণাবলী ও দক্ষতা আছে তা খুঁজে বের করা। নিজের ইউনিক সেলিং পয়েন্ট (ইউএসপি) খুঁজে বের করা এবং যখনই কোনো কোম্পানিতে ইন্টারভিউয়ের জন্য কোনো একটি পজিশনে ডাক পড়বে; সেই জবের চাহিদা অনুযায়ী কিভাবে আপনার ইউএসপি, দক্ষতা ও গুণাবলি কোম্পানির কাজে লাগবে তা বুঝিয়ে বলা। বিশেষ করে, আপনি যে বিষয়ে গ্রাজুয়েশন করেছেন; সেই সাবজেক্ট ম্যাটার নিয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখা। কমন ইন্টারভিউ কোশ্চেনগুলোর উত্তর আগে থেকেই ভালো করে প্রিপারেশন নেওয়া। যে প্রফেশনে ক্যারিয়ার গড়তে চান; সেই প্রফেশনালদের সাথে নেটওয়ার্কিং তৈরি করা, বিভিন্ন ক্যারিয়ার বিষয়ক সেমিনার ও ট্রেনিং প্রোগ্রামে নিয়মিত অংশ নেওয়া, মার্কেটে যারা চাকরিদাতা; তাদের খুঁজে বের করে যোগাযোগের চেষ্টা করা, সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের পরিচ্ছন্ন ও প্রোঅ্যাক্টিভ ভাবমূর্তি তুলে ধরা।
Shibli-cover.jpg
চাকরিপ্রাপ্তির মাধ্যম বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ, বিভিন্ন কোম্পানির ক্যারিয়ার পেজ, প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশন, বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই- এ সবগুলোর সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রাখা ও অনেক সময় বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন বা কোম্পানির হয়ে ভলান্টরি কাজে অংশগ্রহণ করা। যা আপনাকে চাকরিদাতাদের চোখে পড়তে সাহায্য করবে। প্রতিদিনই নতুন কিছু না কিছু জ্ঞান আহরণ করবেন। যা আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে চাকরির প্রতিযোগিতায়। বিশেষ করে, মাইক্রোসফট অফিস ও প্রেজেন্টেশনে নিজেকে ভালো করবেন। সত্য ও তথ্যনির্ভর করে লিংকডইন প্রোফাইল সুন্দর করে শো-কেসিং করা ও লিংকডইনে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় দেওয়া।
চাকরি জীবনের শুরুতেই শুধু ডেস্ক জব ছাড়া কাজ করবেন না- এ মানসিকতা পরিহার করুন। চাকরি জীবনের শুরুতে পারলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করুন এবং বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে কাজ করার মানসিক প্রস্তুতি রাখুন। বিভিন্ন ডাইভারসিফাইড ইনভায়রনমেন্টে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাই একদিন আপনাকে যেকোনো পরিস্থিতিতে ভালো করতে শেখাবে। বিজনেসের ভেতরের অপারেশন সম্পর্কে শেখাবে। যা আপনার ক্যারিয়ারে দ্রুত উন্নতি করতে সহায়ক হবে। যদি পছন্দের চাকরি ক্যারিয়ারের শুরুতেই খুঁজে না পান। তাহলে যে কাজের সুযোগ পান সেটা দিয়েই শুরু করুন। পরে পছন্দমত সময়ে পছন্দমত ট্রাকে ক্যারিয়ারটা ঠিক করে নেবেন। চাকরিক্ষেত্রে যেকোনো ছোট বা বড় কাজই আপনাকে অনেক অনেক চাকরি ও বিজনেস সংক্রান্ত বাস্তব অভিজ্ঞতা দেবে। যা আপনাকে অন্যত্র চাকরি পাওয়ার আরও সম্ভাবনা তৈরি করে দেবে। ইদানিং অনেক তরুণ সেলসে ক্যারিয়ার শুরু করতে চায় না। আমি নিজেও চাকরি জীবনের শুরুতে সেলসম্যান ছিলাম। সেলস এমন এক জব, যা আপনার ব্যবসায়িক জ্ঞান, যোগাযোগ দক্ষতা, কষ্টসহিষ্ণুতা, মার্কেট বাস্তবতা, লিডারশিপ ও ম্যানেজেরিয়াল স্কিল, কমিটমেন্ট, ক্রেডিবিলিটি, ব্যক্তিগত আয় ও অর্জন অন্যসব চাকরির থেকে বেশি দেবে এবং আপনার ভালো চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অন্য যেকোনো পেশা বা চাকরির তুলনায় অনেক অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে। কারণ জীবনে উন্নতি করতে হলে আপনাকে যেকোনো পেশায়ই নিজের ভালো সেলসম্যানশিপ থাকতে হবে।
ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। যা আপনাকে কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ দেবে অন্যদের থেকে। পারলে ক্যারিয়ারের শুরুতেই বিজনেস কমিউনিকেশন, পিপলস স্কিলস এবং ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সের ওপর শর্ট কোর্স করে নিন। ইউটিউব বা গুগল থেকে শিখে নিন এসব বিষয়ে। নিজেকে টেকনোসেভি অর্থাৎ নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে নিজেকে পরিচিত রাখুন। ফেসবুকের প্রফেশনাল ব্যবহার শিখুন। কারণ নিয়োগকারীরা অনেক সময় প্রার্থীর ফেসবুক পেজের অ্যাক্টিভিটি লগ চেক করে ক্যান্ডিডেটের পারসোনাল ক্যারেক্টারস্টিক বোঝার জন্য। তাই ফেসবুক যদিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, কিন্তু আমাদের দেশে রিক্রুটমেন্ট প্রফেশনালরা ফেসবুক থেকেও অনেক সময় প্রটেশিয়াল ক্যান্ডিডেটদের ফলো করে।
জীবনে সফল হওয়ার জন্য কী করা জরুরি?
শিবলী এইচ আহমদ: স্বপ্ন, দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, অদম্য ইচ্ছাশক্তি, জয়ী হওয়ার মানসিকতা, হার না মানা মনোভাব, জ্ঞান ও কঠোর পরিশ্রম অর্থাৎ স্মার্ট ওয়ার্ক এবং নিজের প্রতি কমিটমেন্ট আপনাকে ঠিকই সফল করবে। নিজেকে ও নিজের কাজকে ভালোবাসতে শিখুন, সফলতা তার ভালোবাসা নিয়ে আপনার দিকে হাত বাড়িয়ে দেবে নিঃসন্দেহে। নলেজ, নেটওয়ার্কিং ও নোটেবল প্রেজেন্টেশনের সাথে প্রতিনিয়ত পরিকল্পিত পরিশ্রম আপনাকে উন্নতির সোপানে নিয়ে যাবে।

নিজের সেরা ভার্শন হন : শিবলী এইচ আহমেদ

908
SHARES
1.2k
VIEWS
শিবলী এইচ আহমেদ বর্তমানে সহকারী মহাব্যবস্থাপক হিসাবে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ও সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ইন্ডাষ্টীয়াল গ্রুপ অব কোম্পানিজ মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাষ্টীজ (এমজিআই) এর এফএমসিজি ডিভিশনের মানবসম্পদ বিভাগের
(এইচআর) দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে তাকে। ১৪ বছরের এই চাকুরী জীবনের শুরু হেরিটেজ ইঞ্জীনারিং এন্ড কমিউনিকেশন লিঃ এ কোঅরডিনেটর হিসাবে। এর পর একে একে কিউবি বাংলাদেশ, নাভানা গ্রুপ, প্যাসিফিক এ-১ গ্রপে এইচ আর ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করি। তারপর হেড অব এইচ আর হিসাবে ডেকো ফুডস লিঃ ও গেটকো গ্রুপের দায়িত্বেও নিয়োজিত ছিলেন।তিনি বাংলাদেশের এমন এক এলাকা থেকে ঢাকায় এসেছেন যে এলাকার মানুষেরা করপোরেট প্রায় নেই বললেই চলে। আর নিজের আত্মীয় স্বজনরাও সাহায্য করার মত কেউ ছিলনা।
তাই রেফারেন্স পাবার সুযোগও খুব কম ছিল। কিন্তু অদম্য ইচ্ছা ছিল বড় হবার। তার সফলতার এই জার্নির গল্প শুনাচ্ছেন টকস্টোরির হেড অফ কর্পোরেট শামীম আশরাফ ।
আপনার ছোটবেলার শিক্ষনীয় কোন শিক্ষনীয় কোন গল্প বলেন?
শিবলী এইচ আহমেদ : তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। দিনটি শুক্রুবার, জুম্মার নামাজ পড়তে মসজিদে গেছি। মসজিদের পাশে দিয়েই প্রধান একটা সড়ক গেছে। নামাজ প্রায় শেষের দিকে। এমন সময় হঠাত রাস্তার দিকে চোখ পড়তেই দেখি একটা ট্রাক্টর আসছে আঁখ বোঝাই ৪টা ওয়াগান (বগি) নিয়ে। আখবোঝাই ট্রাক্টরগুলো বেশ আস্তে চলে। এটা রাস্তায় চলার সময় ছোট-বড় ছেলেরা লাফ দিয়ে ওয়াগানের পিছনে উঠে আঁখ টেনে টেনে বের করে নিচে ফেলে, অন্যরা রাস্তা থেকে তা কুড়িয়ে নিয়ে দ্রুত সরিয়ে ফেলে। যেহেতু ট্রাক্টরের চালক ও হেলপার গাড়ির সামনের দিকে থাকে তাই ওনারা গাড়ি থেকে আঁখ চুরি হচ্ছে বুঝে উঠতে উঠতেই ছেলেরা যতটুকু পারে আঁখ এভাবে খেলার ছলে চুরি করে নেয় চলন্ত গাড়ি থেকে খাবার জন্য। এটা এক ধরনের খেলাও তাদের কাছে। যাহোক আমি জুম্মার নামাযের সালাম কোনমতে ফিরিয়েই দোড় দিয়ে রাস্তায় এসে ট্রাক্টরের পিছনের ওয়াগানে লাফ দিয়ে উঠে ৮-১০টা মত আস্ত আখের ডাল দ্রুত নামিয়ে রাস্তায় ফেললাম। তারপর নেমে রাস্তা থেকে নিচু হয়ে ওঁই আঁখগুলো কুড়াচ্ছি এমন সময় মনে হল কে যেন জামার কলার চেপে ধরে টেনে উপরে তুলছে। সোজা হয়ে উঠেই দেখি আব্বা চোখ লাল করে তাকিয়ে আমার দিকে। আমি আব্বাকে জমের মত ভয় পেতাম। আব্বা ছিলেন আমাদের শহরের অত্যন্ত নামকরা সৎ, চরম পরহেজগার কড়া বেসরকারি হাইস্কুল শিক্ষক, এমনকি তিনি আমাদের পরিবারের অত্যন্ত অভাব সত্বেও বাসায় কোন ছাত্র প্রাইভেট পড়াতেননা কখনও। মনে হল আমার সামনে কেয়ামত। আব্বা সাধারনরত জুম্মার নামাজ প্রায় ২ ঘন্টা ধরে পড়েন। তাই আমি নির্ভয়ে ছিলাম আব্বা অন্তত নামাজের পরেই বের হবেন না মসজিদ থেকে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত আব্বা ওইদিন মসজিদের জানালার ধারের কাতারে নামায পড়ছিলেন। তাই নামাজের সালাম ফিরিয়েই
আমাকে আঁখ টানতে দেখেছিলেন। ব্যাশ, আর কই যাই। আমার হাত থেকে ওঁই আখের ডাল টান দিয়ে নিয়েই মাঝ রাস্তায়ই পেটানো শুরু করলেন লোকজনের মাঝে। তারপর কান ধরে মারতে মারতে বাড়ি নিয়ে এলেন। আব্বার মারের চোটে আমার জ্বর চলে এল সাথে সাথেই। আমি বিকালে প্রচন্ড জ্বরে বিছানায় কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছি, এমন সময় আব্বা ঘরে ঢুকলেন একগোছা আঁখ নিয়ে। আমার পাশে বসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চার মত হাঊমাউ করে কাদতে কাদতে বললেন, তোর আঁখ খেতে মন বললে আমাকে বলতিস, কেন রাস্তার উপর গাড়ি থেকে আঁখ চুরি করে টানতে গেলি? পরে শুনলাম, আব্বা আমার ট্র্যাক্টর থেকে টেনে ফেলা আখগুলো নিয়ে অনেকদূরের বেলগাছি নামক গ্রামের যে মাঠ থেকে ট্র্যাক্টরে করে আঁখগুলো নিয়ে আসা হয়েছিল সেখানে যেয়ে আখের দাম শোধ করে আখগুলো নিয়ে এসেছেন। আমি আব্বার শিশুর মত আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না দেখে ও আখের দাম শোধ দেবার গল্প শুনে প্রতিজ্ঞা করলাম জীবনে কখনও না বলে কারও কোন জিনিস নেবনা, চুরি করবনা তা যত ছোট কিছুই হোক, এমনকি তা যদি খেলার ছলেও হয়। আজও তা মেনে চলি বাবার ওই মার খাবার থেকে নেয়া শিক্ষা।
Add caption
আপনার অনুপ্রেরনার মানুষ কে?
শিবলী এইচ আহমেদ : আমার অনুপ্রেরনার মানুষ অনেকগুলো। ব্যাক্তি জীবনে আমার অনুপ্রেরনার ৯০% ভাগ আমার বাবা-মা। তারপর বড় ভাইয়াও পরিবার। প্রফেশনাল জীবনে আমার অনুপ্রেরনার বড় উৎস আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক জনাব মোশাররফ হোসেন, রাজিব আহমেদ, মোঃ কাম্রুজ্জামান ভাই, আসিফ ইকবাল, আতিকুজ্জামান খান, কামরুল হাসান, কাজী এম আহমেদ, সালেহ মুজাহিদ, মউনুদ্দিন চোধুরী স্যার সহ অনেকেই যাদের সবার নাম বললে অনেক সময় লেগে যাবে, যাদেরকে আমি মেন্টর মানি। যাদের মত আমি হতে চাই।
আপনার সাফল্যের চাবিকাঠি কি?
শিবলী এইচ আহমেদ : একাগ্রচিত্তে অবরিত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া ও নিয়মিত জ্ঞানার্জন করে নিজেকে আপডেট রাখা। হার না মানা মনোভাব, বিনয়ী হওয়া, মানুষ্ কে সম্মান দেখান, প্রচন্ড অর্থকষ্ট ও শারিরিক অসুস্থতার অবিরাম যন্ত্রণা ভুলে থাকার জন্য শুধুই কাজের মধ্যে ডুবে থাকা, নিজেকে ছুটি না দেওয়া। শুধু নিজেকে বারবার বলেছি, সৃষ্টিকর্তা চাননা আমি ব্যারথ হই।
সাকসেসের জন্য কোন বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন?
শিবলী এইচ আহমেদ : বিজয়ী ও বিনয়ী মনোভাব, পরিশ্রম, সততা, বিসশ্বতা, অন্যের কাছে নিজের গ্রহনযোগ্যতা, জ্ঞানার্জনের স্পৃহা, যোগাযোগ দক্ষতা, নিজেকে ও অন্যকে মোটিভেট করার ক্ষমতা এবং দারুন ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স।
কি শিখছেন প্রতিনিয়ত?
শিবলী এইচ আহমেদ : এইচআর এনালিটিক্স, বিজনেস অপারেশন, সেলস ম্যানেজমেন্ট,, বিগডাটা ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যান বিহেভিরাল নলেজ, ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স এভিনিউস, অরগানাইজেশনাল ডেভেলপমেন্ট ট্যাক্টিস, নিউ বিজনেস একুইমেন, নিউ টেকনোলোজি, ব্রান্ডিং এন্ড ক্ মিউনিকেশন এবং অবশ্যই কিভাবে ভাল থাকা যায়, অন্যকে বা প্রতিষ্ঠানোকে কীভাবে ভাল রাখা যায় তা শিখছি।
কর্পোরেটে ভাল করতে চাইলে কি করতে হবে?
শিবলী এইচ আহমেদ : জানতে হবে যে পদে কাজ করবেন সেই পজিশনের কাজ বা কেপিআই, কোম্পানীর ব্যালেন্সশিট, মিশন, ভিশন ও ভ্যালুজ বুঝতে হবে, জানতে হবে কোম্পানির ভ্যালু চেইনের সাসসেস ফ্যাক্টরস, মিশন ক্রিটিক্যাল পজিশন্সগুলো যা বিজনেসের প্রফিট মার্জিন তথা বটম লাইনে প্রভাব ফেলে। রেগুলার কম্পিটিশন এনালিটিক্স, মার্কেট ডিনামিক্স জানা থাকতে হবে। এসব জানা না থাকলে বিজনেস এর চাহিদা অনুযায়ী ইনপুট বা ডেলিভারি দিতে পারবেন। ডিপার্টমেন্ট এর চাহিদা বুঝে সেই
অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজগুলো নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করা। বসের সব নির্দেশনা এর নোট রাখা ও বসকে এই অনুভুতি দেওয়া যেন আপনাকে কাজ দিয়ে আপনার বস নিশ্চিন্ত থাকতে পারে সবসময় যে কাজটি নির্ভুলভাবে সময়ের মধ্যেই হয়ে যাবে। আপনাকে যেন অফিসের সব কাজেই নিশিন্ত মনে ভরসা করতে পারেন। একইভাবে অন্যান্য বিভাগের সহকরমিরাও যেন আপনার কাজে ও ব্যবহারে সন্তস্ট থাকে। কখনও নিজের কোম্পানীর, এমনকি সহকর্মীরও বদনাম করবেন না কোথাও, বরং সবসময় প্রশংসা করবেন। সবসময় আপনার পজিশনে আরও কি কাজ করলে আর ভাল ফলাফল
আসবে সেটা নিয়ে চিন্তা করবেন। সববিভাগের সব সিনিয়রদেরকে সাথে সবসময় ভাল সম্পর্ক রাখতে হবে। নিজে যে প্রফেশনে আছেন, সেই প্রফেশনে ইন্ডাস্ট্রিতে যে সব সিনিয়র ও নামকরা প্রফেশনাল আছেন তাদের তাদের সাথে যতটা সম্ভব যোগাযোগ রাখবেন, তাদের কাছাকাছি থাকবেন, তাদের গুনাবলীগুলোকে অনুসরণ করবেন। ইন্ডাস্ট্রির এইচআর প্রফেশনালদের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখবেন, কারন আপনাকে নিয়োগ দেওয়া, এসেসমেন্ট করা এই বিভাগেরই কাজ।
ব্যর্থতা থেকে কি শিক্ষা নিয়েছেন?
শিবলী এইচ আহমেদ : কেন ব্যার্থ হলাম সেই কারন খুজে সেই ভুলগুলো পরবর্তীতে না করা। ব্যারথতা বুকের ভিতর আগুন ধরায় যা পরবর্তীতে ভাল করার অনুপ্রেরনা যোগায়। আমার মত প্রতিটি পদক্ষেপে বারবার ব্যারথ হওয়া মানুষ খুব একটা দেখিনি। তারপরও
সৃষ্টিকর্তার অপার মেহেরবানীতে কখনও ভেঙ্গে না পড়ে শুধু চেস্টা করে গেছি ব্যারথতা থেকে বেরিয়ে আসার। শুধু নিজেকে বারবার বলেছি, সৃষ্টিকর্তা চাননা আমি ব্যারথ হই। আমি জয়ী হতেই জন্মেছি।
তরুণরা তরুণ বয়সে কি কি কাজে অংশগ্রহন করতে পারে?
শিবলী এইচ আহমেদ : সামাজিক উন্নয়নমূলক বিভিন্নকাজে অংশ নেওয়া, বিভিন্ন স্কিল ডেভেলমেন্ট ট্রেনিং ও কর্মশালায় অংশ নেওয়া, নেয়া।যে প্রফেশনে ক্যারিয়ার গড়তে চান সেই প্রফেশনালদের সাথে নেটওয়ার্কিং তৈরি করা, বিভিন্ন ক্যারিয়ার বিষয়ক সেমিনার ও ট্রেনিং প্রোগ্রামে নিয়মিত অংশ নেয়া, মার্কেটে যারা চাকুরীদাতা তাদেরকে খুজে বের করে তাদের সাথে যোগাযোগের চেস্টা করা, সোসাল মিডিয়াতে নিজের পরিচ্ছন্ন ও প্রোএক্টিভ ভাবমূতি তুলে ধরা, বিভিন্ন কোম্পানিতে পার্টটাইম জবের চেস্টা করা, অবসর সময়গুলোতে ছোটখাট কাজ করে উপার্জনের পথ তৈরি করা। এসইও, গ্রাফিক ডিজাইন, আপ ওয়ার্কের কাজ শেখা, ইভেন্ট অরগানাইগিং এর কাজে অংশ নেওয়া, নিজের ইউ টিউব চ্যানেল তৈরি করা, ফেসবুকে পজিটিভ গ্রুপ তৈরি করা, বিভিন্ন ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে প্রোজেক্টবেস কাজে অংশ নেওয়া ইত্যাদি।
আপনার ইচ্ছা কি?
শিবলী এইচ আহমেদ : মানুষের সরল হাসি দেখতে খুব ভাল লাগে। তাই চাই আমার কাজে মানুষ যেন একটু হাসার উপলক্ষ্য খুজে পাই। ভাল মানুষহওয়া, নিজে স্বপ্ন দেখা এবং অন্যকে স্বপ্ন দেখানো, সারা পৃথিবী ঘুরে দেখা, নানা সংস্কৃতির মানুষের সাথে মেশা। স্বপ্ন দেখি একদিন বড় কোম্পানীর সিইও হবার। “মানুষ তুমি মানুষ হও” এবং হাসতে শেখো, হাসাতে শোখো- এই স্লোগানটা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া।
এখন কি নিয়ে কাজ করছেন?
শিবলী এইচ আহমেদ :তরুণদের সাথে বিগত কয়েক বছর যাবত খুবই ওতঃপ্রতভাবে কাজ করছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার, পারসনাল ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, গ্রুপ কাউন্সেলিং, কোচিং, ট্রেনিং, সোসাল মিডিয়াতে নলেজ শেয়ারিং ছাড়াও বিভিন্ন
কোম্পানীগুলোতে ইন্টারভিউ ফেস করার সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টে সহায়তা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। তরুণদেরকে বিভিন্ন প্রফেশনাল নেটওয়ার্কের আয়তায় এনে তাদেরকে চাকুরিপ্রাপ্তি ও ক্যারিয়ারে উন্নতি করার জন্য কখনও সরাসরি সহায়ক, কখনও পরামর্শকের ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছি অবিরত। যেহেতু বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট (বিএসএইচআরএম) এর নির্বাচিত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলর দায়িত্বে আছি, সেই প্রেক্ষাপট থেকেও আমাকে সবসময়ই তরুণদের ক্যারিয়ারের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হয়। এছাড়াও সেলস এম্বাসেডর বাংলাদেশ, সেলস লিডারস বাংলাদেশ, বিল্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অরগানাইজেশন ফর লারনিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বোল্ড), বাংলাদেশ সোসাইটি ফর এপারেল এইচআর প্রফেশনাল (বিশার্প), ইয়ুথ ক্যারিয়ার ইন্সটিটিউট সহ বেশ কয়েকটি
পিপলস ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশনের সাথে ওতপ্রোতভাবে অনেকদিন থেকেই কাজ করছি তরুনদের দক্ষতা উন্নয়নে। গ্লোবাল গুডউইল এম্বাসিডর (ইউএসএ) হিসাবেও আমার একটা নৈতিক দায়িত্ব আছে তরুন সমাজের প্রতি। ২০২০ সালে ন্যাশনাল লেভেলে আরও বড় পরিসরে কাজ করার প্লান আছে। ক্যারিয়ার থেকে লব্ধ আমার কোন পরামর্শ বা অভিজ্ঞতা যদি কোন মানুষের ক্যারিয়ার উন্নতির কাজে আসে বা জীবন চলার পথ সহজ করে তাহলে সেটাই আমার প্রাপ্তি। প্রতিটি তরুনের ভিতরেই অপরিসীম সম্ভাবনা আছে ভাল কিছু করে দেখানোর। শুধু দরকার একটু সঠিক দিক নির্দেশনা। যেটা আমি আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে পাইনি ফলে অনেক কস্ট হয়েছে ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে। তাই আমি চাই আমার পরিচিত কোন তরুণ-
তরুণী যেন সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে ক্যারিয়ারের শুরুতেই ভুল পথে না চলে যায় বা সিধান্থীন্তায় না ভোগে।
আপনার ভাল লাগার দুইটা লাইন?
শিবলী এইচ আহমেদ : ১। নিজের সেরা ভার্শন হন।
২। সমস্যা সৃষ্টিকারী না, সমাধানকারী হন।

রবিবার, ১৮ মার্চ, ২০১৮

আশা নামের আলোটি কে কখনোই নিভতে দেওয়া উচিৎ নয়



একটি রুমের ভেতরে চারটি মোমবাতি জ্বলছিলো। মোমবাতি গুলো একে অপরের সাথে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলা শুরু করলো। প্রথম মোমবাতি টি বললো, ‘আমি শান্তি। কেউ আমাকে জ্বালিয়ে রাখতে পারবেনা। আমি এখন নিভে যাবো।’ তারপর সেটি নিভে গেলো।


. দ্বিতীয় মোমবাতি টি বললো, ‘আমি বিশ্বাস। শান্তি যেহেতু নেই, তাই আমার আর জ্বলতে থাকার কোনো প্রয়োজন দেখছিনা। আমি এখন এখন নিভে যাবো’। কথা শেষ করার পর দ্বিতীয় মোমবাতি টি নিভে গেলো। .

তৃতীয় মোমবাতি এবার মুখ খুললো, আমি ভালবাসা। শান্তি এবং বিশ্বাস কেউ নেই, তাই আমারো বেশিক্ষণ জ্বলার মত শক্তি নেই। মানুষেরা আমাকে গুরুত্ব না দিয়ে একপাশে সরিয়ে রাখে। শুধু তাই না, ওরা প্রিয় মানুষ গুলোকে পর্যন্ত ভুলে যায়।" কথা শেষ করে তৃতীয় মোমবাতি টিও নিভে গেলো।

. কিছুক্ষণ পর রুমের মধ্যে একটি বাচ্চা প্রবেশ করলো, তিনটা নিভে যাওয়া মোমবাতির পাশে টিমটিমে জ্বলতে থাকা চতুর্থ মোমবাতি দেখে বাচ্চা টি প্রশ্ন ছুড়ে দিলো, তোমরা জ্বলছো না কেন? .

তোমাদের পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত জ্বলা উচিৎ ছিলো। তারপর

বাচ্চা টি কাঁদতে শুরু করলো। এবার চার নম্বর মোমবাতি টি মুখ খোলে। ‘ভয় পেয়ো না। আমি যতক্ষণ জ্বলছি, তুমি চাইলেই আমাকে দিয়ে আবারো বাকি মোমবাতি গুলোকে জ্বালাতে পারো। আমার নাম আশা। "বাচ্চা টি আশা নামের মোমবাতি টি দিয়ে একে একে বাকি মোমবাতি গুলোকে আবারো জ্বালালো। সমস্ত রুমটা আবারো উজ্জ্বল আলোতে আলোকিত হয়ে উঠলো।

গল্পটি রূপক কিন্তু হাজারো হতাশা, দুঃখ আর সমস্যার অন্ধকারে ডুবে গিয়ে আশা নামের আলোটি কে কখনোই নিভতে দেওয়া উচিৎ নয়। কারন আশা না থাকলে আমাদের জীবন থেকে শান্তি, বিশ্বাস এবং ভালবাসাও অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।

ভাবতেছি জবটা চেঞ্জ করব। কিন্তু ভয় পাচ্ছি!

ভাবতেছি জবটা চেঞ্জ করব। কিন্তু ভয় পাচ্ছি! যারা এমন চিন্তায় আছেন তারা ঠিক লাইনেই আছেন। কারন আপনি কেন জব চেঞ্জ করতে চান তা আপনার থেকে ভাল কে...